গণতন্ত্র ছেড়ে আবার রাজতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের স্লোগান উঠেছে নেপালে। সেই সঙ্গে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ নেপালে আবার রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে হিন্দু ধর্মতে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও শোনা যাচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে ঘিরে রোববার হাজারও মানুষ নামে কাঠমান্ডুতে।
পশ্চিমাঞ্চল সফর শেষ করে জ্ঞানেন্দ্র কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলে স্বাগত জানাতে হাজির হয় বিপুল সাধারণ নাগরিক। স্লোগান ওঠে ‘আবার রাজতন্ত্র চাই’। জ্ঞানেন্দ্রকে আবার রাজপ্রাসাদে বসবাস করতে দেওয়ার দাবিও ওঠে। দাবি তোলা হয় নেপালকে আবার ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ ঘোষণার। পুলিশ জানিয়েছে, রাজতন্ত্রপন্থী জমায়েতে হাজার দশেকের মত হয়েছে। তবে জ্ঞানেন্দ্রের সমর্থক রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির দাবি, লক্ষাধিক!
দুই দশক আগেও নেপালে ছিল রাজতন্ত্র। শেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্র ২০০৬ সালে ক্ষমতাচ্যুত হন। ২০০৮ সালের মে মাসে সংবিধান সংশোধন করে ২৪০ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র ভেঙে নেপালে প্রতিষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা। ২০১৫ সালে অনুমোদিত হয় নতুন ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সংবিধান। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে জ্ঞানেন্দ্র নেপালের সাধারণ নাগরিক হিসাবে বাস করেন। কোনও রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক ক্ষমতা নেই। অনুমতি নেই রাজপ্রাসাদে যাওয়ার। এমনকি, সরকারি কোনও সুবিধাও তিনি পান না।
নেপালে রাজতন্ত্রের সময়ে দেশটি হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবেই পরিচিত ছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে ঘোষণা করা হয়। পরে দেশের সংবিধানেও সেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৭৬৮ সালে সেখানে শাহ রাজবংশের সূচনা হয়। জ্ঞানেন্দ্রর বড়ভাই রাজা বীরেন্দ্র ছিলেন পৃথ্বীনারায়ণের নবম প্রজন্ম। তাকে হত্যা করে যুবরাজ দীপেন্দ্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। মৃত্যুশয্যাতেই তার অভিষেক হয়। দীপেন্দ্র বাঁচেননি।
২০০১-এর জুন মাসের সেই হত্যাকাণ্ডের পর জ্ঞানেন্দ্র সিংহাসনে বসেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মাওবাদী সমস্যার মোকাবিলায় ২০০৫ সালের গোড়ায় নেপালে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা হাতে নেন জ্ঞানেন্দ্র। কিন্তু দ্রুত জনবিক্ষোভ দানা বাঁধে। বছরের মাথায় ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
সূত্র: এনডিটিভি
এসজেড